ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি করতেন তাঁরা

দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারে আসা স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিদের নিশানা করত সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত চক্র। পরে চক্রটি নিজেদের ডিবি (গোয়েন্দা শাখা) পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে টাকা ও মালামাল ডাকাতি করত।

Sep 4, 2025 - 18:42
 0  2
ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি করতেন তাঁরা
ছবি, সংগৃহিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারে আসা স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিদের নিশানা করত সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত চক্র। পরে চক্রটি নিজেদের ডিবি (গোয়েন্দা শাখা) পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে টাকা ও মালামাল ডাকাতি করত। গতকাল বুধবার রাতে নগরীর গুলিস্তানে গোলাপ শাহ মাজারের কাছে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ওই চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন দ্বীন ইসলাম ওরফে কাউছার আহমেদ (৩৫), কামাল হাওলাদার (৩৫), আবদুর রহমান হাওলাদার (৩৭), মেহেদী হাসান ওরফে হাসান (৩৮), বাবুল হাওলাদার (৩৮), রমিজ তালুকদার (৩৫) ও জান্নাতুল ফেরদৌস (২২)।

সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাঁরা জানতে পারেন সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত দল রাজধানীর গুলিস্তানে গোলাপ শাহ মাজারের দক্ষিণ পাশে লেগুনাস্ট্যান্ডের সামনে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে শাহবাগ থানার একটি চৌকস দল সেখানে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তাঁরা পালানোর চেষ্টা করলে সাতজন পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। এ সময় তাঁদের সহযোগী চার থেকে পাঁচজন কৌশলে পালিয়ে যান। তাঁদের মধ্যে দুজন ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চাকরিচ্যুত সদস্য।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে ১টি মাইক্রোবাস, ২টি ডিবি জ্যাকেট, ২টি ওয়াকিটকি, ১টি পুলিশের ভুয়া পরিচয়পত্র, ২টি হাতকড়া, ২টি খেলনা পিস্তল, ২টি পকেট রাউটার, ১২টি মুঠোফোন, এক্সপেন্ডেবল লাঠিসহ লেজার লাইট উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় গ্রেপ্তার ও পলাতক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তা মাসুদ আলম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা জানান, তাঁরা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তাঁরা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে রাজধানীর তাঁতীবাজার এলাকায় আসা স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের ও ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিদের নিশানা করতেন। পরে ডিবিসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তাঁরা ডাকাতি করতেন।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার কাউসারের বিরুদ্ধে ১০টি, আবদুর রহমান হাওলাদারের বিরুদ্ধে ৩টি, মেহেদী হাসান ওরফে হাসানের বিরুদ্ধে ৪টি, বাবুল হাওলাদারের বিরুদ্ধে ২টি ও রমিজ তালুকদারের নামে ৪টি ডাকাতির মামলা রয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মাসুদ আলম বলেন, হাতকড়া পুলিশ ও র‍্যাব ব্যবহার করে। তবে সোর্সিংয়ের মাধ্যমে কোনোভাবে ডাকাতেরা এসব হাতকড়া সংগ্রহ করছেন। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার কাউছার নিজের নামে পুলিশ পরিদর্শকের পরিচয়পত্র বানিয়েছেন। পুলিশ পরিচয়পত্রে যেভাবে বিপি নম্বর থাকে, কাউসারের পরিচয়পত্রে বিপি নম্বরও দেওয়া আছে। দেখলে বোঝার উপায় নেই যে এটি ভুয়া পরিচয়পত্র।