মন্ত্রীদের জন্য ৬০ গাড়ি, অর্থ উপদেষ্টা বন্ধুর প্রতি কতটা কেয়ারিং: তাজনুভা
আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য ৬০টি গাড়ি কেনার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। মিতসুবিশি পাজেরো কিউএক্স-২৪২৭ সিসি মডেলের প্রতিটি গাড়ির দাম এক কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এসব গাড়ি কিনতে ব্যয় হবে ১০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য ৬০টি গাড়ি কেনার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। মিতসুবিশি পাজেরো কিউএক্স-২৪২৭ সিসি মডেলের প্রতিটি গাড়ির দাম এক কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এসব গাড়ি কিনতে ব্যয় হবে ১০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
সরকারের এমন পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক তাসনুভা জাবিন। বৃহস্পতিবার তিনি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে অর্থ উপদেষ্টার উদ্দেশে বলেছেন, ‘অর্থ উপদেষ্টা কতটা কেয়ারিং আর কৃতজ্ঞ বন্ধুর প্রতি, বন্ধু মন্ত্রী হওয়ার সাথে সাথেই যাতে নতুন গাড়িতে চড়তে পারেন, আগাম ব্যবস্থা।’
তানসুভা জাবিন লিখেছেন, ‘আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য ১০১ কোটি মূল্যের ৬০টি পাজেরো গাড়ির প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। মানে অর্থ উপদেষ্টা কতটা কেয়ারিং আর কৃতজ্ঞ বন্ধুর প্রতি, বন্ধু মন্ত্রী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যাতে নতুন গাড়িতে চড়তে পারেন, আগাম ব্যবস্থা।’

তাজনুভা জাবিনের ফেসবুক পোস্ট। স্ক্রিনশট
এনসিপির এই নেত্রী আরও লিখেছেন, ‘যে গণঅভ্যুত্থানের ওপর দাঁড়িয়ে যে জুলাই সনদ সেটার বাস্তবায়নের জন্য পরের সংসদ পর্যন্ত নাকি অপেক্ষা করতে হবে। যে শহীদ-আহতদের রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত সরকার পাজেরো গাড়ি কিনছেন তাদের বিচার, তাদের নিরাপত্তা, মিনিমাম তাদের সঠিক তালিকাও প্রকাশ করতে পারে নাই।’
তাসনুভা জাবিন লিখেছেন, ‘এই সরকার নাকি ছাত্রদের। এ এক বিস্ময়কর ব্যাপার, এই সরকারের সব ব্যর্থতার পুরো ভাগ কি করে যেন সব ছাত্রদের হয়ে যায়। আর গণঅভ্যুত্থানের সব কৃতিত্ব ১০ ভাগ হওয়ার পর এক ভাগ শুধু ছাত্রদের।’
অর্থ মন্ত্রণালয় যে প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে সেটি অনুযায়ী, আগামী নির্বাচনে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করবেন এমন কর্মকর্তাদের জন্যও কেনা হচ্ছে ১৯৫টি পাজেরোসহ মোট ২২০টি গাড়ি। সব মিলিয়ে ২৮০টি গাড়ি কিনতে সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ৪৪৫ কোটি টাকা।
মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের জন্য ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ক্যামরি ও ল্যান্সার গাড়ি কেনা হয়। এর মধ্যে মন্ত্রীরা ব্যবহার করতেন ক্যামরি গাড়ি। প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা ব্যবহার করতেন ল্যান্সার। বর্তমান উপদেষ্টারা মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের ওই গাড়িগুলো ঢাকায় ব্যবহার করছেন। ঢাকার বাইরে গেলে বিভিন্ন দপ্তরের জিপ গাড়ি ব্যবহার করছেন তারা।
সরকারের এই পদক্ষেপ নিয়ে আরও একটি প্রশ্ন সামনে এসেছে। আগামী মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা ৬০ হবে– কীভাবে জানল সরকার। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান সমকালকে বলেন, পরবর্তী সরকার বা মন্ত্রীরা কী গাড়ি ব্যবহার করবেন, কী গাড়ি কিনবেন; তার সিদ্ধান্ত বর্তমান সরকার কেন নিচ্ছে? এটা অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নয়।
এমবি এইচআর