শেয়ারবাজারে আস্থাহীনতার ছায়া, ৯ মাসে উধাও ৬২ হাজার বিনিয়োগকারী

মেঘনাবার্তা প্রতিনিধিঃ দেশের শেয়ারবাজারে আবারও নেমে এসেছে অনিশ্চয়তার ঘন ছায়া। আস্থা ফেরানোর নানা উদ্যোগের কথা বলা হলেও বাজারে তার বাস্তব প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। বরং বিনিয়োগকারীরা একে একে সরে যাচ্ছেন। টানা দরপতন, দীর্ঘ মন্দাভাব ও নীতিগত অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগকারীরা এখন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন পুঁজিবাজার থেকে।
সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) তথ্য বলছে, ২০২৫ সালের প্রথম নয় মাসে প্রায় ৩০ হাজার বিনিয়োগকারী তাঁদের বিও (Beneficiary Owner) হিসাব বন্ধ করেছেন, এবং আরও ৩২ হাজার হিসাব শেয়ারশূন্য হয়ে গেছে। অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬২ হাজারেরও বেশি বিনিয়োগকারী কার্যত বাজার থেকে সরে গেছেন।
২০২৪ সালের শেষে বিও হিসাব ছিল ১৬ লাখ ৮২ হাজারের বেশি, যা ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে নেমে এসেছে ১৬ লাখ ৩২ হাজারে। একই সঙ্গে শেয়ারশূন্য হিসাব বেড়েছে ৩ লাখ ৭৫ হাজারে।
শুধু স্থানীয় নয়, বিদেশি বিনিয়োগও কমেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা গেছে, ১১টি বড় কোম্পানিতে বিদেশি শেয়ার ০.১০ শতাংশের বেশি কমেছে। এর মধ্যে রয়েছে—ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, বেক্সিমকো ফার্মা, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, রেনেটা, এমজেএলবিডি, ওয়ান ব্যাংকসহ আরও কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠান।
ডিএসই পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, “মানুষের আস্থা ফেরাতে কার্যকর পদক্ষেপ দরকার। শুধু কয়েকজনকে শাস্তি দিয়ে বাজারে আস্থা ফিরবে না। মানুষ এখানে মুনাফা করতে আসে, লোকসান দিতে নয়।”
তিনি আরও জানান, ব্রোকার হাউসগুলো টানা লোকসানে টিকে থাকার লড়াই করছে। অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাই করছে, কিন্তু মন্দা অব্যাহত থাকলে সেটিও যথেষ্ট হবে না।
এদিকে কমিশন বলছে, তারা স্বচ্ছ হিসাব ব্যবস্থাপনা ও দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ সংস্কৃতি গড়ে তোলার উদ্যোগ নিচ্ছে। রাষ্ট্রায়ত্ত লাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাজারে আনার পরিকল্পনাও রয়েছে। তবে বাস্তব অগ্রগতি না থাকায় বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরার বদলে হতাশা আরও বাড়ছে।
এমবি/এসআর