যুবদলের উদ্যোগে নদীতে ভাসমান সেতু, স্বস্তি পেল হাজারো মানুষ

মেঘনাবার্তা প্রতিনিধিঃ

তিস্তা থেকে নেমে আসা সতী নদী লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের মধুরাম ও সিরামধুরাম এলাকা—সহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামকে দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল। নৌকায় পারাপারই ছিল এলাকাবাসীর একমাত্র ভরসা। ফলে শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও কৃষিকাজে নিয়মিত ভোগান্তির শিকার হতেন কয়েক হাজার মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, সতী নদীর পূর্ব পাশে সিরামধুরাম ও জগৎবেড় গ্রামের প্রায় ৭ শতাধিক পরিবার এবং পশ্চিম পাশে ভোটনাথ, চিনাইতলী ও খলাইঘাট গ্রামের দেড় হাজার পরিবার বসবাস করে। নদীর ওপারে রয়েছে কৃষিজমি ও গুরুত্বপূর্ণ বাজার-হাটসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন শত শত মানুষকে নৌকা ভরসায় নদী পার হতে হতো; নৌকা না পেলে চার-পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে যাওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল।

দীর্ঘদিনের এই দুর্ভোগ লাঘবে লালমনিরহাট যুবদলের নেতাকর্মীরা স্বেচ্ছাশ্রমে একটি ভাসমান সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেন। তিস্তার পানির ওঠানামার কারণে স্থায়ী কাঠ বা বাঁশের সেতু সম্ভব না হওয়ায় তারা ড্রামের ওপর ভাসমান কাঠামো তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। পরে নিজেদের অর্থায়নে প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যয়ে ৮০ মিটার দীর্ঘ ও ৬ মিটার প্রস্থের একটি দৃষ্টিনন্দন ভাসমান সেতু তৈরি করেন।

গত শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে সেতুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রংপুর বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আশাদুল হাবিব দুলু। এসময় তার সহধর্মিণী লায়লা হাবিব, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মমিনুল হক, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আনিচুর রহমান আনিচ, সদস্য সচিব হাসান আলীসহ স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সেতুটি চালু হওয়ায় দুই পাড়ের মানুষ সহজে পারাপার করতে পারছেন। এতে খুশি স্থানীয়রা। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বলছেন, বর্ষায় নৌকা ভরসার ভয় আর নেই। কৃষকরা জানাচ্ছেন, ফসল তোলা ও জমিতে যাতায়াত এখন অনেক সহজ।

জেলা যুবদলের সভাপতি আনিচুর রহমান আনিচ বলেন, “তিস্তার পানি ওঠানামার কারণে ভাসমান সেতুই ছিল সবচেয়ে কার্যকর সমাধান। এতে নদীর দুই পাড়ের হাজারো মানুষ উপকৃত হবে।”

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অধ্যক্ষ দুলু বলেন, “মানুষের কষ্ট দূর করাই বিএনপির লক্ষ্য। যুবদলের এ মানবিক উদ্যোগ প্রশংসনীয়। বিএনপি ক্ষমতায় এলে এখানে স্থায়ী ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।”

এমবি এইচআর