খালেদা জিয়া অত্যন্ত সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে

মেঘনাবার্তা প্রতিনিধিঃ

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনের জামে মসজিদে তাঁর সুস্থতা কামনায় আয়োজিত দোয়া মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন।

খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য কামনা করে সারা দেশের মসজিদে দোয়ার আয়োজন করে বিএনপি। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসও দেশবাসীর কাছে তাঁর সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, বেগম জিয়ার চিকিৎসায় যেন কোনো ঘাটতি না থাকে এবং প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দিতে সরকার প্রস্তুত—এ জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

খালেদা জিয়ার অসুস্থতার খবরে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। সাধারণ মানুষও হাসপাতালে ছুটে যান। রাত ১১টার পর থেকেই এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে ভিড় বাড়তে থাকে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আব্দুল মঈন খান ও মির্জা আব্বাসসহ বিএনপির শীর্ষ নেতারা হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে দলের প্রধানের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেন।

মির্জা আব্বাস জানান, তাঁরা সালাম দিলে খালেদা জিয়া জবাব দিয়েছেন এবং তাঁদের চিনতে পেরেছেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, আগের মতো এবারও দেশনেত্রী সুস্থ হয়ে উঠবেন।

বিকেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকদের কাছ থেকে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান। তিনি বলেন, ‘ইনফেকশনের ঝুঁকি থাকায় সিসিইউতে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। অবস্থার উন্নতি নেই, মেডিক্যাল বোর্ড চেষ্টা করছে।’

রাত ১১টা ৪০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের পক্ষে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও বিশেষ সহকারী মনির হায়দার হাসপাতালে যান। একই সময়ে মির্জা ফখরুল ও আব্দুল মঈন খানও হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন।

বিকেলে নয়াপল্টনের জামে মসজিদে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়া দুই দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি। গত রাতে ডাক্তাররা জানিয়েছেন—তাঁর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদান অপরিসীম। আমরা তাঁর সুস্থতার জন্য সারা দেশের মানুষের কাছে দোয়া চেয়েছি।’

দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনির জটিলতাসহ নানা রোগে ভুগছেন খালেদা জিয়া। গত রবিবার শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাঁকে দ্রুত এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, তাঁর হার্ট ও ফুসফুসে ইনফেকশন হয়েছে।

এর আগে ২৩ নভেম্বর ও ১৫ অক্টোবরও তিনি একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়া হয়েছিল তাঁকে, যেখানে ১৭ দিন চিকিৎসা শেষে তিনি তারেক রহমানের বাসায় বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে থাকেন। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসা শেষে তিনি দেশে ফেরেন।

জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন।

তারেক রহমানের কৃতজ্ঞতা:
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা পরিস্থিতি নিয়ে ড. ইউনূস যে মানবিক বিবৃতি দিয়েছেন, তার জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান উপদেষ্টাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

এমবি এইচআর