গণঅধিকার পরিষদ-এনসিপি একীভূত হবে, গড়বে তরুণদের সবচেয়ে বড় জোট: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

গণঅধিকার পরিষদ ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) একীভূত হবে বলে জানিয়েছেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক দৃশ্যপটে তিনটি ব্লক হচ্ছে।

Sep 22, 2025 - 21:31
 0  1
গণঅধিকার পরিষদ-এনসিপি একীভূত হবে, গড়বে তরুণদের সবচেয়ে বড় জোট: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
ছবি-সংগৃহিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: গণঅধিকার পরিষদ ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) একীভূত হবে বলে জানিয়েছেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক দৃশ্যপটে তিনটি ব্লক হচ্ছে। এর মধ্যে স্বতন্ত্রভাবে এনসিপির নেতৃত্বে একটি ব্লক আসছে। তরুণদের নিয়ে এটি হবে সবচেয়ে বড় জোট।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে এনসিপি প্রতিনিধিদলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নাসীরুদ্দীন এসব কথা বলেন।

এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক জানান, রাজনৈতিক দৃশ্যপটে তিনটি ব্লক হতে যাচ্ছে। একটি ইসলামিক ব্লক এরই মধ্যে হয়ে গেছে। আর বিএনপির নেতৃত্বে একটি ও এনসিপির নেতৃত্বে একটি ব্লক হচ্ছে। তারা যেহেতু বিএনপি ও জামায়াত না, এ জন্য তাদের ব্লকে যাচ্ছেন না। তারা স্বতন্ত্র।

নিজেদের অগ্রযাত্রার জন্য এনসিপির ব্যানারে তরুণদের নিয়ে একত্রে কাজ করা হবে এবং গণমাধ্যমে তা তুলে ধরা হবে বলে জানান নাসীরুদ্দীন।

এনসিপির এ নেতা বলেন, ‘আমরা গণঅভ্যুত্থানের সময় ইশতেহার দিয়েছিলাম। আমরা বলেছিলাম যে যেহেতু ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ হয়নি, আমাদের সামনে দীর্ঘ লড়াই রয়েছে। ফলত ওই জায়গা থেকে গত ১৫ বছরে যে তরুণেরা আন্দোলন করেছিলেন, অনেকেই দল সৃষ্টি করেছিলেন, তারা অনেকেই সম্মত হয়েছেন এনসিপির ব্যানারে যোগ দেওয়ার জন্য। আমরা তাদের সাথে আলোচনা চলমান রেখেছি। আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে যে আমরা একত্র হয়ে কাজ করব। কিন্তু কী প্রক্রিয়াতে এটা হবে সে বিষয়ে এখনো কথাবার্তা চলছে, চূড়ান্তভাবে জানাবো।’

গেল ১৫ বছরে যতগুলো রাজনৈতিক ব্যানার হয়েছে, সবগুলোকে একীভূত করা হচ্ছে বলে জানান নাসীরুদ্দীন। তিনি বলেন, তরুণদের বৃহত্তর জোট আসছে, ইনশা-আল্লাহ।

নাসীরুদ্দীন জানান, আগামী সংসদে সরকারি দল ও বিরোধী দল তো নীতিগত জায়গায় থাকবেই। তবে সংসদ হবে আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে। জামায়াত ও বিএনপির যে তরুণেরা গণঅভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছে এবং যারা ভালো মানুষ, তাদের প্রতি এনসিপির মৌন সমর্থন থাকবে বলে তারা বিবেচনায় রেখেছেন।

এনসিপির এ নেতা বলেন, ‘আগামীর যে সংসদ হবে, এখানে আওয়ামী লীগ থাকবে না, জাতীয় পার্টি থাকবে না। এটা দীর্ঘদিন ধরে আমরা বলে আসছি। এবার ব্যালট রেভ্যুলেশন হবে। ভোটিং প্রসেস থেকে, সব জায়গা থেকে, বাংলাদেশ থেকে আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি হারিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।’

এনসিপির সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদ একীভূত হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে ‘হ্যাঁ’ বলেন নাসীরুদ্দীন। তিনি বলেন, ‘কথাবার্তা চলছে। আমরা সম্মত হয়েছি। কী প্রক্রিয়ায় আসবে এটা নীতিগত জায়গা। আদর্শগত বিষয় স্পষ্ট করেছি। কয়েকটা আসন বা দেনাপাওনার বিষয় না, আদর্শিক লড়াই রয়েছে।’

নাসীরুদ্দীন জানান, তারা পুরোনো ব্যবস্থার সঙ্গে আপস করবেন না। আগামী নির্বাচন হবে সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে। নির্বাচন হবে আলেম, নারী ও তরুণদের পক্ষে। এ আদর্শিক জায়গা থেকে সম্মিলিত রূপ চাচ্ছেন তারা।

গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপি যুক্ত হলে দলের প্রতীক কী হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে এনসিপির এ নেতা বলেন, ‘দলের নাম এনসিপি থাকবে, এনসিপির প্রতীকই থাকবে। অন্য দলের নাম-প্রতীক বিলোপ হবে। এনসিপির অধীনে আরও অনেকগুলো দল আসছে। আমরা বড় ধরনের একটি দল করতে যাচ্ছি। ফলে অনেকগুলা দল, অনেকগুলা মত, অনেকগুলা ব্যানার ইনশাল্লাহ এনসিপির ব্যানারে চলে আসবে।’

শাপলা প্রতীক

মুখ্য সমন্বয়ক জানান, নিবন্ধনের পর শাপলা প্রতীকেই ভোটে লড়বে এনসিপি। সাদা বা লাল শাপলা প্রতীক পাওয়ার দাবি থেকে সরবেন না তারা।

নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘শাপলাতেই আছি। এটা সাদাও হতে পারে, লালও হতে পারে। শাপলাতেই থাকছি, শাপলাতেই দেশের মানুষ ভোট দেবে। প্রতীক তালিকা প্রয়োজনে সংশোধন করবে। দলীয় অবস্থান থেকে, শাপলা থেকে সরছি না। শাপলার বিষয়ে এনসিপি ছাড় দিচ্ছে না।’

১৫০ আসন

এনসিপির নেতা জানান, তারা যে জরিপগুলো করেছেন তাতে তাদের ১৫০ আসনে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারা সেগুলো নিয়ে এরই মধ্যে জেলা সমন্বয়কদের সঙ্গে ঢাকায় ডেকে আলাপ করেছেন ও প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। গণঅভ্যুত্থানে ভূমিকা রাখা আলেম সমাজ, সাবেক সেনা কর্মকর্তা, নারী প্রতিনিধি, সাংবাদিক, শ্রমিক, মজুর ও কৃষকদের প্রক্রিয়াগত জায়গায় রাখা হয়েছে। তাদের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। নাসীরুদ্দীন বলেন, প্রতিটি অনুমানে দেখা যাচ্ছে এনসিপি ১৫০ আসন পেতে যাচ্ছে।