জুলাই গ্রাফিতির ওপর বিএনপি নেতার পোস্টার, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক: টঙ্গীতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে আঁকা গ্রাফিতির উপর বিএনপির একাধিক নেতার নির্বাচনী প্রচারণার পোস্টার লাগানো নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
জুলাই বিপ্লব স্মরণে দেশের বিভিন্ন স্থাপনায় আঁকা এই গ্রাফিতিতে শহীদদের স্মৃতি, দেশপ্রেমিক বার্তা ও জনকল্যাণমূলক চিত্র ফুটে উঠেছিল। কিন্তু এক বছর যেতে না যেতেই এসব গ্রাফিতি ঢেকে দেওয়া হচ্ছে রাজনৈতিক পোস্টারে। এ নিয়ে সামাজিক ও ছাত্র মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তা'মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা টঙ্গীর প্রধান ফটকের সামনে উড়ালসেতুর দেওয়ালে শিক্ষার্থীরা আঁকেন জুলাই বিপ্লবকে কেন্দ্র করে নানা চিত্র। এর মধ্যে ছিল ‘৩৬ জুলাই’ শিরোনামের দেশপ্রেমিক গ্রাফিতিও। কিন্তু সম্প্রতি ওই চিত্রের উপর বিএনপির দুই নেতার নির্বাচনী পোস্টার লাগানো হয়।
এছাড়া গাজীপুর-০৬ আসন ঘোষণা হওয়ার পর থেকে প্রায় ৬/৭ জন বিএনপি থেকে এমপি পদপ্রার্থী হিসেবে নিজেদের ঘোষণা দিয়েছেন। প্রত্যেক পদপ্রার্থী এবং তাঁদের অনুসারীদের পোস্টারে এখন মহাসড়ক থেকে বিভিন্ন স্থাপনা পর্যন্ত প্রায় সব জায়গাই ছেয়ে গেছে। এতে জনগণের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
এ নিয়ে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী ও জুলাই যোদ্ধা সাফওয়ান বলেন, ‘আমরা লজ্জিত। যে জুলাই বিপ্লবে আমাদের হাজারো ভাই শহীদ হয়েছেন, তাদের স্মরণে আঁকা গ্রাফিতির উপর পোস্টার লাগানো শহীদদের অবমাননা ছাড়া কিছু নয়।’
তা'মীরুল মিল্লাতের শিক্ষার্থী তামিম বলেন, ‘আমরা শ্রদ্ধা জানিয়ে গ্রাফিতি করেছি। কিন্তু রাজনৈতিক নেতাদের পোস্টারে সেটি ঢেকে দেওয়া হয়েছে। এটা শহীদদের প্রতি গাদ্দারি।’
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল্লাহ মহিত বলেন, ‘যারা তরুণদের চাওয়া বুঝতে পারে না, তাদের রাজনীতির মাঠে টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে।’
গাজীপুর মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মিরন বলেন, ‘জুলাইকে ধারণ করে বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। জুলাই গ্রাফিতিকে অসম্মান করার কোনো সুযোগ নেই। পোস্টার লাগানো হয়েছে শ্রমিকদের অসতর্কতার কারণে। বিষয়টি দুঃখজনক, ভবিষ্যতে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
এ বিষয়ে টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গাজী সালাউদ্দিনকে ফোন করলে তিনি বলেন, ‘অফিসে এসে কথা বলতে হবে।’ তবে বিএনপি নেতা আলমগীর পাঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এমবি/এসআর