কটিয়াদীতে চীনা মুরগির খামারে সফলতা, বছরে আয় প্রায় ১২ লাখ টাকা

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ফেকামারা গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে চীনা মুরগি বা তিতির পালনে সাফল্য অর্জন করেছেন খামারি মাসুদুল আলম। তার এই উদ্যোগ ঘুরিয়ে দিয়েছে ভাগ্যের চাকা, পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিতে তৈরি করেছে নতুন সম্ভাবনা।

Sep 10, 2025 - 13:18
 0  2
কটিয়াদীতে চীনা মুরগির খামারে সফলতা, বছরে আয় প্রায় ১২ লাখ টাকা
ছবি-সংগৃহিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ফেকামারা গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে চীনা মুরগি বা তিতির পালনে সাফল্য অর্জন করেছেন খামারি মাসুদুল আলম। তার এই উদ্যোগ ঘুরিয়ে দিয়েছে ভাগ্যের চাকা, পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিতে তৈরি করেছে নতুন সম্ভাবনা।

দুই বছর আগে মাত্র ৯০০ বাচ্চা দিয়ে তিতির খামার শুরু করেন মাসুদুল। বর্তমানে খামারে রয়েছে প্রায় আড়াই হাজার ছোট তিতির এবং ৫০০ বড় তিতির।

প্রতিটি বাচ্চা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়। একটি মা তিতির বছরে গড়ে ১৫০টি ডিম দেয়। প্রতিটি ডিমের ওজন ৪০ থেকে ৪৫ গ্রাম এবং ইনকিউবেটরে যা ফোটাতে সময় লাগে ২৭-২৮ দিন। দেশের আবহাওয়ায় সাধারণত ফেব্রুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ডিম দেয় তারা।
প্রজনন মৌসুম মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত।

প্রতিটি বড় তিতিরের ওজন ৩ থেকে ৫ কেজি পর্যন্ত হয়, যা কেজি প্রতি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে সরবরাহ করা হচ্ছে এসব পাখি। দানাদার শস্য, কচি ঘাস, ভুসি, কুঁড়া, পোকামাকড় ও সবজি এদের প্রধান খাদ্য।

খামারি মাসুদুল আলম জানান, প্রতি মাসে খরচ বাদে গড়ে এক লাখ টাকা লাভ হয়, বছরে আয় ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা। এ ছাড়াও তিনি জানান, পোলট্রি মুরগির তুলনায় তিতিরের মৃত্যুহার কম, রোগবালাই নেই বললেই চলে এবং ওষুধের প্রয়োজনও খুব কম। জন্মের পর প্রথম দুই সপ্তাহ ভালোভাবে পরিচর্যা করলে বাকি সময়ে মৃত্যুহার প্রায় শূন্য।

স্থানীয়রা জানায়, মাসুদুলের সফলতা দেখে তারাও তিতির খামারে আগ্রহী হয়েছেন। তাদের মতে, সরকার বাজার সম্প্রসারণে সহায়তা করলে অনেকেই এই খাত থেকে স্বাবলম্বী হতে পারবেন।

কটিয়াদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ উসমান গণী জানান, যারা নতুন করে তিতির খামার করতে আগ্রহী হবে, তাদের প্রয়োজনীয় সব পরামর্শ দেওয়া হবে। ইতোমধ্যেই যেসব খামার হয়েছে, তাদের নিয়মিত চিকিৎসা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তিতিরের রোগবালাই কম, ডিম বেশি দেয়, ওজন দ্রুত বাড়ে, উৎপাদন খরচ কম এবং দেখতে আকর্ষণীয় হওয়ায় এটি বাণিজ্যিকভাবে অত্যন্ত লাভজনক।