রাজনীতিকদের জাতিসংঘ সফর, যা বললেন রাশেদ খান

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। রোববার দিবাগত রাতে দেশের তিনটি রাজনৈতিক দলের ৬ জনসহ সফরসঙ্গীদের নিয়ে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন।

Sep 22, 2025 - 14:02
 0  1
রাজনীতিকদের জাতিসংঘ সফর, যা বললেন রাশেদ খান
ছবি, সংগৃহিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। রোববার দিবাগত রাতে দেশের তিনটি রাজনৈতিক দলের ৬ জনসহ সফরসঙ্গীদের নিয়ে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন।

সফরসঙ্গী হিসেবে ৬ জন রাজনৈতিক নেতা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রয়েছেন। তারা হলেন— বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, জামায়াতে ইসলামী নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের ও জামায়াত নেতা নকিবুর রহমান তারেক এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা।

আর এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন তুলেছেন এবং ‍সমালোচনা করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। সেই সঙ্গে ‘বৈষম্য দূর করতে এসে এই উপদেষ্টা পরিষদ আরো বৈষম্যের উৎপাদন করেছে’ বলেও সমালোচনা করেছেন তিনি।

সোমবার সকালে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া পোস্টে রাশেদ খান লেখেন— ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাগণ জাতিসংঘ সফরে- ৩টা রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিজেদের প্রটেকশনের স্বার্থে নিয়ে গেছেন। তাছাড়া সেখানে রাজনীতিকদের কোনো কাজ নাই। স্বাভাবিকভাবে সেখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করবে। হয়তো তারা গালিগালাজ বা উপদেষ্টাদের অপদস্ত করার মত ঘটনা ঘটাবে। ইতোমধ্যে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা নিরাপত্তার জন্য ব্যানার নিয়ে নেমে গেছে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগও আছে। বিদেশের মাটিতে মুখোমুখি অবস্থান! কল্পনা করেন, যদি রাজনৈতিক প্রতিনিধিরা না যেতো, তাহলে কি বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা আসতো? না আসলে পরিণতি কি হতো?’

Rashed-Khan

এমন প্রশ্ন তোলার পর ‘উপদেষ্টা পরিষদ বৈষম্য উৎপাদন করছে’ মন্তব্য করে সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, ‘অর্থাৎ সরকারের উপদেষ্টারা যতো বড় কথায় বলুক না কেন, তারা টিকেই আছে রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন ও সহযোগিতায়। আমার মাঝেমধ্যে মনে হয়, বৈষম্য দূর করতে এসে এই উপদেষ্টা পরিষদ আরও বৈষম্যের উৎপাদন করেছে।’

এরপরই তিনি প্রধান উপদেষ্টার বিদেশ সফর নিয়ে সমালোচনা করে রাশেদ খান বলেন, ‘সাড়ে তেরো মাসে সরকার প্রধান যেসব অনুষ্ঠানে দেশের বাইরে গেছেন, সেসব অনুষ্ঠানে পৃথিবীর অন্যান্য অনেক দেশ স্রেফ প্রতিনিধি পাঠিয়েছে। কিন্তু আমাদের সরকার প্রধান সেখানে নিজে উপস্থিত হয়ে অনুষ্ঠানের গুরুত্ব বাংলাদেশিদের কাছে প্রবল করেছেন’।

পোস্টের শেষ দিকে তিনি এবারের জাতিসংঘ সফর নিয়ে বলেন, ‘সর্বশেষ জাতিসংঘ সফরে বিএনপির ২ জন প্রতিনিধি ও জামায়াত-এনসিপির ১ জন করে প্রতিনিধি থাকায় জামায়াত-এনসিপি আপত্তি জানিয়েছে, তারা সরকার থেকে সমতা চায়! মানে নিজেদের মধ্যে সমতার নীতি প্রতিষ্ঠিত হলে আর কোনো দলের প্রয়োজন নেই! এভাবেই সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ গঠন করতে চায়।

প্রধান উপদেষ্টার জাতিসংঘ সফর সফল ও সার্থক হোক।’

এদিকে, সফরসূচি অনুযায়ী ড. ইউনূস ২২ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে পৌঁছাবেন এবং ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেবেন। এছাড়া তিনি একাধিক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক এবং গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।

ভাষণে তিনি বিগত এক বছরে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারমূলক উদ্যোগ, ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা এবং ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের অঙ্গীকার তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

এমবি এইচআর