অন্তর্বর্তী সরকারের টিভি লাইসেন্সেও ‘দলীয় প্রভাব’? আর্থিক সক্ষমতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন

দুটি নতুন চ্যানেলকে লাইসেন্স দেওয়ায় সমালোচনা— রাজনৈতিক বিবেচনা ও আর্থিক সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিশ্লেষকরা

Oct 9, 2025 - 15:27
Oct 9, 2025 - 15:31
 0  4
অন্তর্বর্তী সরকারের টিভি লাইসেন্সেও ‘দলীয় প্রভাব’?  আর্থিক সক্ষমতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন

মেঘনাবার্তা প্রতিনিধি: অন্তর্বর্তী সরকারের সময় দুটি নতুন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে লাইসেন্স দেওয়ার পর দেশজুড়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, আগের সরকারগুলোর মতো এবারও দলীয় প্রভাব ও রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠতা বিবেচনা করে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে।

তথ্য মন্ত্রণালয় ‘নেক্সট টেলিভিশন’ ও ‘লাইভ টিভি’ নামে দুটি চ্যানেলের অনুমোদন দিয়েছে।

নেক্সট টিভির পেছনে আছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর নেতা আরিফুর রহমান তুহিন, আর লাইভ টিভির উদ্যোক্তা আরিফুর রহমান, যিনি এনসিপি গঠনের আগে নাগরিক কমিটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

তারা দাবি করেছেন— সব নিয়ম মেনেই আবেদন করা হয়েছে, এবং তাদের প্রতিষ্ঠানে পেশাদার ও বিনিয়োগকারীরা যুক্ত আছেন।

তবে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, দুটি কোম্পানিতেই বিএনপি-সম্পৃক্ত কিছু বিনিয়োগকারী রয়েছেন।

এই অভিযোগের জবাবে সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, “রাজনৈতিক বিবেচনায় কাউকে লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। সরকার বরং ফ্যাসিবাদবিরোধী ও বিকল্প মিডিয়া গড়ে তুলতে চায়।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে গণমাধ্যমে সংস্কার ও স্বচ্ছতার আশা ছিল, কিন্তু এই অনুমোদন সেই প্রত্যাশাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “যেভাবে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, তাতে আগের সরকারের কর্তৃত্ববাদী সংস্কৃতিরই পুনরাবৃত্তি দেখা যাচ্ছে।”

বাংলাদেশে বেসরকারি টেলিভিশন লাইসেন্সের ইতিহাসে রাজনৈতিক প্রভাব নতুন নয়। ১৯৯৮ সালে একুশে টিভি, এটিএন বাংলা ও চ্যানেল আই অনুমোদনের পর থেকেই প্রায় প্রতিটি সরকারের আমলে ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী, দলীয় নেতা বা সাংবাদিকরা লাইসেন্স পেয়েছেন।

গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, “দলীয় আনুগত্য ও স্বজনপ্রীতির ভিত্তিতে অতিরিক্ত সংখ্যায় লাইসেন্স দিয়ে বাজারে অস্থিরতা তৈরি করা হয়েছে।”

এছাড়া আগের সরকারগুলোর সময় লাইসেন্স বিক্রি-বাণিজ্যের অভিযোগও বহুবার উঠেছে; একাত্তর টিভি, সময় টিভি, চ্যানেল নাইনের মালিকানা হাতবদল তারই উদাহরণ।

অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারা কোনো চ্যানেল বন্ধ না করে বরং নতুন উদ্যোগের সুযোগ তৈরি করতে চায়।

তবে মিডিয়া পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, “যে সংস্কৃতি বদলানোর কথা ছিল, সেটিই নতুন আকারে ফিরে আসছে।”

এমবি/এসআর