গুম-খুনে জড়িত সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচার নিশ্চিতের দাবি

গুম-খুন ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের একাংশ।

Oct 12, 2025 - 19:36
 0  2
গুম-খুনে জড়িত সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচার নিশ্চিতের দাবি

নিজস্ব প্রতিনিধি:  গুম-খুন ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের একাংশ। কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠানই আইনের শাসনের ঊর্ধ্বে নয় উল্লেখ করে তারা বলেছে, ‘ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা কোনো প্রতিষ্ঠানের মর্যাদার অবমাননা নয়; বরং এটি দায়িত্বশীলতা, পেশাদারত্ব ও গণতান্ত্রিক চরিত্রের প্রকাশ। তাই আমরা সেনা নেতৃত্ব, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, অপরাধীদের তদন্ত ও বিচারপ্রক্রিয়ায় পূর্ণ সহযোগিতা করুন।’

আজ রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন ছাত্র ইউনিয়নের এই অংশের সভাপতি তামজিদ হায়দার ও সাধারণ সম্পাদক শিমুল কুম্ভকার।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ছাত্র ইউনিয়ন গভীর উদ্বেগ ও তীব্র ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ করছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত সেনা, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হলেও এখন পর্যন্ত তাঁদের গ্রেপ্তার কার্যকর করা হয়নি। একই সঙ্গে শেখ হাসিনা ও তাঁর শাসনামলের শীর্ষ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের বিরুদ্ধেও গুম-খুন, নির্যাতন ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের অভিযোগে তদন্ত শুরু হলেও বিচারপ্রক্রিয়া দৃশ্যমান নয়। এই বিলম্ব ও দীর্ঘসূত্রতা জনগণের ন্যায়বিচারের প্রতি আস্থা নষ্ট করছে এবং দায়মুক্তির সংস্কৃতিকে আরও প্রলম্বিত করছে।’

ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা বলেছেন, ‘আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, জুলাই গণ–অভ্যুত্থান শুধু সরকার পরিবর্তনের আন্দোলন ছিল না; এটি ছিল অন্যায়, স্বৈরশাসন ও রাষ্ট্রীয় দমননীতির বিরুদ্ধে জনগণের ঐতিহাসিক প্রতিরোধ। সেই অভ্যুত্থানের পর জনগণ একটি ন্যায়ভিত্তিক, জবাবদিহিমূলক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার স্বপ্নে একত্র হয়েছে। কিন্তু বিগত ফ্যাসিবাদী আমলে সংঘটিত গুম, খুন ও নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্তদের বিচারে রাষ্ট্রীয় গাফিলতি সেই স্বপ্নকে বিপন্ন করছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘গুম কমিশনের প্রতিবেদনে ইতিমধ্যে ১ হাজার ৮০০-এর বেশি গুমের অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে আছেন শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক কর্মী, শ্রমজীবী মানুষ, নারী ও শিশুরা। সেনাবাহিনী, র‍্যাব, ডিজিএফআই, পুলিশ ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার ছত্রচ্ছায়ায় “আয়নাঘর”সহ গোপন বন্দিশালায় সংঘটিত এসব অপরাধ মানবতার ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। এই নৃশংসতায় শেখ হাসিনা সরকার ও সংশ্লিষ্ট সামরিক-পুলিশ কর্মকর্তারা সরাসরি দায়ী। গণ–অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে জনগণের অভিপ্রায়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারও রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করেনি, বরং জনগণের ন্যায্য আন্দোলন দমনে ইচ্ছাকৃতভাবে গণবিরোধী অবস্থান নিয়ে জুলুম করেছে।’

এমবি/টিআই