৫৩ ঘণ্টা পর উপাচার্যের আশ্বাসে অনশন ভাঙলেন চবির ৯ শিক্ষার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাত দফা দাবিতে আমরণ অনশনে বসা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ৯ শিক্ষার্থী দীর্ঘ ৫৩ ঘণ্টা পর আজ শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় উপাচার্যের আশ্বাসে অনশন ভেঙেছেন। ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’-এর ব্যানারে বাম সংগঠন ও কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী গত বুধবার বেলা একটা থেকে প্রক্টর অফিসের সামনে এ কর্মসূচি পালন করছিলেন।
দীর্ঘক্ষণ অনশনে থাকার ফলে ৯ জনই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বলে জানা যায়। এর মধ্যে সুমাইয়া সিকদার, ধ্রুব বড়ুয়া ও জশদ জাকির বেশি অসুস্থতা বোধ করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল থেকে চিকিৎসা নেন। অনশনরত ৯ জনের মধ্যে ৭ জনকে লো প্রেসারের কারণে স্যালাইন দেওয়া হয়।
অনশনরত ৯ শিক্ষার্থী হলেন বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ওমর সমুদ্র, সংগীত বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির, স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাংগঠনিক সম্পাদক রাম্রা সাইন মারমা, ইংরেজি বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর রাজনৈতিক শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক আহমেদ মুগ্ধ, একই বিভাগের দপ্তর সম্পাদক নাইম শাহ জান, বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ও গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ধ্রুব বড়ুয়া, মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও নারী অঙ্গনের সংগঠক সুমাইয়া শিকদার, সংগীত বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সংগঠক ঈশা দে এবং বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুদর্শন চাকমা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘গতকাল দুই উপ-উপাচার্য, ছাত্র উপদেষ্টাসহ কয়েকজন শিক্ষক এসেছিলেন। কিন্তু তারা যে আশ্বাস দিয়েছিলেন, সেটা পর্যাপ্ত না। আমাদের দাবি পূরণ না হওয়ার মতো আশ্বাস ছিল না। আজ উপাচার্য স্যার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন তিনি আমাদের দাবি আন্তরিকতার সঙ্গে দেখবেন।’
অনশনরত শিক্ষার্থীদের সাত দফা দাবি হলো ব্যর্থতার দায়ে প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ, আহত শিক্ষার্থীদের পূর্নাঙ্গ তালিকা প্রকাশ, নিরাপত্তাহীন অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য অবিলম্বে মানসম্মত ভ্রাম্যমাণ আবাসনের ব্যবস্থা কর এবং আবাসনচ্যুত শিক্ষার্থীদের মালামাল উদ্ধারে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ, উদ্ভূত পরিস্থিতিকে ঘিরে বিশেষভাবে চিহ্নিত শিক্ষার্থীদের সকলপ্রকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা এবং নিরপরাধ এলাকাবাসীদের হয়রানি বন্ধ করা, বৈপরীত্যমূলক দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসনে উভয় পক্ষের অন্তর্ভুক্তিমূলক সমন্বয় কমিটি গঠন করা এবং ন্যূনতম তিন মাস পরপর মিটিং করা এবং সিন্ডিকেট কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের রোডম্যাপ প্রকাশ ও বাস্তবায়ন করা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহইয়া আখতার বলেন, ‘যারা আন্দোলন করছে, তারা আমারই শিক্ষার্থী। আমরা আগামী রবিবারে বিকেল তিনটায় তাদের সময় দিয়েছি। তারা তাদের দাবিগুলো আমাদের কাছে দিয়েছে। আমি প্রাথমিকভাবে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। রবিবার আন্তরিকতার সহিত এ সমস্যার সমাধান করা হবে।’
এমবি/এসআর