মেট্রোরেল চলাচলের নতুন সময় নির্ধারণ কার্যকর রোববার থেকে, আগামী মাসে বাড়বে ট্রিপও

মেঘনাবার্তা প্রতিনিধিঃ
রাজধানী ঢাকাবাসীর যাতায়াতে আরও স্বস্তি আনতে মেট্রোরেলের চলাচল সময় এক ঘণ্টা বাড়ানো হচ্ছে। আগামী রোববার (২০ অক্টোবর) থেকে এই নতুন সময়সূচি কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।

ডিএমটিসিএলের সূত্রে জানা গেছে, নতুন সূচিতে সকালে আগের তুলনায় আধা ঘণ্টা আগে এবং রাতে আধা ঘণ্টা পরে পর্যন্ত মেট্রোরেল চলবে। একই সঙ্গে আগামী মাসের মাঝামাঝি থেকে ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে, যা বাস্তবায়িত হলে দুই ট্রেনের মধ্যবর্তী বিরতি অন্তত দুই মিনিট কমে যাবে।

নতুন সময়সূচি

বর্তমানে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে প্রথম ট্রেন ছাড়ে সকাল ৭টা ১০ মিনিটে, নতুন সূচিতে তা ছাড়বে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে। সর্বশেষ ট্রেন এখন ছাড়ে রাত ৯টায়, নতুন সূচিতে ছাড়বে রাত সাড়ে ৯টায়।
অন্যদিকে মতিঝিল থেকে প্রথম ট্রেন ছাড়বে সকাল ৭টায় (আগে ছিল ৭টা ৩০ মিনিট), আর শেষ ট্রেন ছাড়বে রাত ১০টা ১০ মিনিটে (আগে ছিল ৯টা ৪০ মিনিট)।

শুক্রবার মেট্রোরেল চলাচলও আধা ঘণ্টা আগে শুরু হবে—বেলা ৩টার পরিবর্তে আড়াইটায়, এবং শেষ সময় আধা ঘণ্টা বাড়ানো হবে।

ডিএমটিসিএলের পরিকল্পনা

ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক আহমেদ বলেন,

“পর্যায়ক্রমে সেবা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এজন্য পর্যাপ্ত পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। আগামী রোববার থেকে দিনে এক ঘণ্টা বাড়তি সময় মেট্রোরেল চালানোর চেষ্টা চলছে। আগামী মাসের মাঝামাঝিতে ট্রিপ বাড়ানো সম্ভব হবে বলে আশা করছি।”

বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে চার লাখ যাত্রী মেট্রোরেলে যাতায়াত করেন। সময় ও ট্রিপ বাড়লে যাত্রী সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে ডিএমটিসিএল।

ট্রেন ব্যবস্থাপনা ও ট্রিপ পরিকল্পনা

বর্তমানে ২৪ সেট ট্রেনের মধ্যে ১২ সেট সার্বক্ষণিকভাবে যাত্রী পরিবহন করে। নতুন সময়সূচিতে চালু হলে ১৯ সেট ট্রেন সার্বক্ষণিকভাবে চলবে।
এখন মেট্রোরেল দিনে গড়ে ২৩৮টি ট্রিপ সম্পন্ন করে। ব্যস্ত সময়ে ট্রেনের বিরতি ৬ মিনিট, অফ-পিক সময়ে ৮ মিনিট, আর কম ব্যস্ত সময়ে ১০ মিনিট। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী এই ব্যবধান ক্রমে ৪, ৬ ও ৮ মিনিটে নামিয়ে আনা হবে।

প্রকল্পের অগ্রগতি

বাংলাদেশে প্রথম মেট্রোরেল চালু হয় ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা থেকে আগারগাঁও রুটে। পরে পর্যায়ক্রমে মতিঝিল পর্যন্ত চালু হয় ২০২৩ সালের শেষ দিকে। বর্তমানে কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণের কাজ চলছে।

প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা, যা এখন দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকায়। এর মধ্যে ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা এসেছে **জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)**র ঋণ হিসেবে।

নিয়মিত যাত্রী ও ট্রাভেল এজেন্সি কর্মকর্তা আরশাদুল হক বলেন,

“যানজটের শহর ঢাকায় মেট্রোরেলের যাত্রী–চাহিদা ব্যাপক। তাই চলাচল সময় ও ট্রিপ বাড়ানো হলে তা যাত্রীদের জন্য স্বস্তির হবে।”

চলাচল সময় ও ট্রিপ বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে ঢাকাবাসীর দৈনন্দিন যাতায়াতে মেট্রোরেল আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এমবি এইচআর