গভীর রাতে শিশুর ডাকে প্রতিবেশীরা ঘরে গিয়ে পেলেন মায়ের মরদেহ
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় নিজ বসতঘরে ঢুকে এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিনিধি: মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় নিজ বসতঘরে ঢুকে এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার উপজেলার এনায়েতনগর এলাকার উত্তর মাঝেরকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে জড়িত সন্দেহে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত পাখি বেগম (২৮) ওই এলাকার সৌদিপ্রবাসী সোহাগ হাওলাদারের স্ত্রী। অন্যদিকে আটক পলি বেগম একই এলাকার শাহাদাত হাওলাদারের স্ত্রী ও পাখির চাচি শাশুড়ি।
পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে মাঝেরকান্দি গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে খাবার খেয়ে চার বছরের শিশুসন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন পাখি বেগম। এ সময় বাড়িতে আর কেউ ছিলেন না। পরে দিবাগত রাত একটার দিকে তাঁদের বসতঘরের চালের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা। এ শব্দে ঘুম ভেঙে গেলে প্রতিবেশীদের ডাকতে দরজা খোলেন পাখি। এ সময় কয়েকজন দুর্বৃত্ত ঘরে ঢুকে শিশুটির সামনে পাখিকে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে শিশুটি বাইরে বেরিয়ে প্রতিবেশীদের ডেকে আনে। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে তাঁরা পাখিকে রক্তাক্ত ও মৃত অবস্থায় পান। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে পাঠায়।
পাখির শাশুড়ি নাজমা বেগম অভিযোগ করেন, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার রাতে পলি বেগম নিজের বাড়িতে বসে ঢাক–ঢোল পিটিয়ে নাচ–গান করেছেন, যাতে খুনের ঘটনাটি কেউ টের না পান। এ ছাড়া পলির স্বামী শাহাদাত হাওলাদার ও বাবা ইউনুস সরদার এ খুনের সঙ্গে জড়িত।
এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শাহাদাত ও ইউনুস এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। অভিযোগের বিষয় জানতে তাঁদের মুঠোফোনে কল দেওয়া হলেও নম্বরগুলো বন্ধ পাওয়া গেছে।
প্রাথমিকভাবে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে ধারণা করছেন কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহেল রানা। তিনি মুঠোফোনে বলেন, পাখি নিজের শ্বশুরবাড়িতে সন্তানকে নিয়ে একাই থাকেন। গতকাল রাতে দুর্বৃত্তরা কৌশলে ইট নিক্ষেপ করলে ঘরের দরজা খোলেন পাখি। এরপর দুর্বৃত্তরা ঘরে মধ্যে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর বুকে আঘাত করে। পরে তিনি বিছানায় লুটিয়ে পড়েন। এ সময় চার বছর বয়সী শিশুটি ঘর থেকে বেরিয়ে প্রতিবেশীদের ডেকে তোলে। খবর পেয়ে আজ ভোরে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। হত্যাকারী ব্যক্তিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
এমবি/টিআই