আগস্টে ৪৯৭ সড়ক দুর্ঘটনায় ৫০২ জন নিহত, উল্লেখযোগ্য কারণ সড়কের মাঝে ছোট-বড় গর্ত

আগস্টে সারা দেশে ৪৯৭ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫০২ জন নিহত এবং এক হাজার ২৩২ জন আহত হয়েছেন।

Sep 3, 2025 - 16:44
 0  2
আগস্টে ৪৯৭ সড়ক দুর্ঘটনায় ৫০২ জন নিহত, উল্লেখযোগ্য কারণ সড়কের মাঝে ছোট-বড় গর্ত

নিজস্ব প্রতিনিধি: আগস্টে সারা দেশে ৪৯৭ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫০২ জন নিহত এবং এক হাজার ২৩২ জন আহত হয়েছেন। এ মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে, বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দেশের সড়কের মাঝে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সদ্য বিদায়ী আগস্ট মাসে সারা দেশে ৪৯৭টি সড়ক সংগঠিত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় ৫০২ জন নিহত ও এক হাজার ২৩২ জন আহত হয়েছেন। এ মাসে রেলপথে ৩৪ টি দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত ও ৭ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ২১টি দুর্ঘটনায় ২৭ জন নিহত, ২২ জন আহত ও ১৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৫৫২টি দুর্ঘটনায় ৫৬৩ জন নিহত এবং এক হাজার ২৬১ জন আহত হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এসময়ে ১৬৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৭৬ জন নিহত ও ১৪৪ জন আহত হয়েছেন। যা মোট দুর্ঘটনার ৩৩ দশমিক ১৯ শতাংশ, নিহতের ৩৫ দশমিক ০৫ শতাংশ ও আহতের ১১ দশমিক ৬৮ শতাংশ। এই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে ১৩২টি, এসব দুর্ঘটনায় ১২৮ জন নিহত ও ৩৩৩ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে বরিশাল বিভাগে ১৫টি। এসব সড়ক দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত ও ২২ জন আহত হয়েছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে, আগস্ট মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হচ্ছে– বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দেশের সড়কের মাঝে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি, এসব গর্তের কারণে দুর্ঘটনা বেড়েছে; সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা, নসিমন-করিমন অবাধে চলাচল; জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়ক বাতি না থাকায় হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা; সড়কে মিডিয়ান বা রোড ডিভাইডার না থাকা, সড়কে গাছপালায় অন্ধ বাঁকের সৃষ্টি; মহাসড়কের নির্মাণ ক্রটি, যানবাহনের ক্রটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা; উল্টোপথে যানবাহন, সড়কে চাঁদাবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রীপরিবহন; অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রীবহন এবং বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং বিরামহীন ও বিশ্রামহীনভাবে যানবাহন চালানো।

দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশগুলো হচ্ছে– বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের সড়ক-মহাসড়ক জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করা; জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা; দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস প্রদান; গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় মহাসড়কে ফুটপাতসহ সার্ভিস লেইনের ব্যবস্থা করা; সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা; মহাসড়কে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা রাখা, রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা; সড়ক পরিবহন আইন উন্নত বিশ্বের আদলে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে প্রয়োগ করা; সারা দেশে উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা; মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা; মেয়াদোত্তীর্ণ গণপরিবহন ও দীর্ঘদিন যাবত ফিটনেসহীন যানবাহন স্ক্যাপ করার উদ্যোগ নেওয়া; ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী চালকের ওপর চাপিয়ে দেওয়া ভ্যাট ও আয়কর অব্যাহতি দিতে হবে এবং মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত রিকশা আমদানি ও নিবন্ধন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

এমবি/টিআই