রাণীশংকৈলে চুরির ঘটনায় গরু ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে শ্যালোমেশিন চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে কার্তিক চন্দ্র রায় (৪৮) নামে এক গরু ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুষ্কৃতকারীরা।

Sep 9, 2025 - 15:41
 0  2
রাণীশংকৈলে চুরির ঘটনায় গরু ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা

নিজস্ব প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে শ্যালোমেশিন চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে কার্তিক চন্দ্র রায় (৪৮) নামে এক গরু ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুষ্কৃতকারীরা। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টায় উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়নে কুয়াভিটা নায়ানপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েক দিন আগে কুয়াভিটা নায়ানপুর এলাকার একটি ধানক্ষেতের বিল থেকে সাদেকুল নামের এক ব্যক্তির শ্যালোমেশিন চুরি হয়। এ ঘটনায় ওই এলাকার নিমাই রায়ের ছেলে কানাই রায়ের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মেলে। কানাই রায় ধনী হলেও তার ছেলে নিমাই মাদকাসক্ত। ছেলের অপরাধ আড়াল করতে স্থানীয়ভাবে সালিশ করে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা হয়। কিন্তু দায় এড়ানোর জন্য কার্তিক রায়ের ছেলে কপিল দেবের ওপর চুরির অপবাদ চাপানোর চেষ্টা করা হয়। এ নিয়ে নিমাই রায় ও কার্তিক রায়ের পরিবারের মধ্যে তুমুল বাগবিতণ্ডা শুরু হয়।

ঘটনার দিন রাতে কানাই চন্দ্রের ছেলে নিমাই চন্দ্র নিজের দোষ ঢাকতে কপিলকে ডেকে শ্যালোমেশিন চোর বানানোর চেষ্টা করে। খবর পেয়ে কার্তিক ঘটনাস্থলে হাজির হলে তাদের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ বাধে। একপর্যায়ে কানাই, নিমাই, হেদা, হরিলাল রায়, কালো কটু রায়, ডালিম রায়, সকাল রায়, হিরেন রায় হদা, বিকাল রায়, কাশিনাথ রায়, ধলা রায়, কমলেশ রায়সহ তাদের বংশ ও অনুসারীরা কার্তিক রায়কে কুয়াভিটা গ্রামের চৌরাস্তা থেকে জোর করে ধরে তাদের বাড়ির উঠানে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয় এবং দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা, গলা ও হাতে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই কার্তিক রায় লুটিয়ে পড়েন। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে রাণীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

স্বজনদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে একই গ্রামের হেদা রায় ও তার সহযোগীরা বিভিন্ন অজুহাতে কার্তিককে হয়রানি করে আসছিল। কানাইয়ের ছেলে নিমাই একজন নেশাখোর, কুয়াভিটা গ্রামের সবাই তাকে নেশাখোর হিসেবে চেনে। নিজের নেশার টাকার অভাবে নিমাই রায় স্থানীয় কিছু ছেলেকে নিয়ে মেশিন চুরি করে। একপর্যায়ে এই চুরির বিষয়টি ফাঁস হয়ে যায় এবং এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করা হয়। কিন্তু কানাই রায় অত্যন্ত ধনী হওয়ায় তার ছেলের নাম চুরির অভিযোগে জড়ানো নিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। নিজের ও পরিবারের নাম কলঙ্কিত হবে ভেবে সে প্রতিশোধমূলক এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তারা প্রকৃত অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কামনা করেন।

এমবি/টিআই