২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম; বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পদত্যাগ দাবি বিনিয়োগকারীদের
মেঘনাবার্তা প্রতিনিধি: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগের আলটিমেটাম দিয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, গতকাল গভর্নরের এক সংবাদ সম্মেলনে দুর্বল পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক একীভূত করার ঘোষণা এবং এসব ব্যাংকের শেয়ার শূন্য ঘোষণা বিনিয়োগকারীদের ক্ষুব্ধ করেছে।
বিনিয়োগকারীদের দাবি, “গভর্নরের এমন ঘোষণা বেআইনি এবং তার কোনো এখতিয়ার নেই। শুধু গভর্নরই নয়, অর্থ উপদেষ্টা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সবাই ব্যর্থ।”
তারা জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গভর্নর পদত্যাগ না করলে দেশের আর্থিক খাতে কঠোর আন্দোলনে নামবেন বিনিয়োগকারীরা।
গভর্নরের সিদ্ধান্তে চাঞ্চল্য
বুধবার (৫ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ড. আহসান এইচ মনসুর জানান, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক—এই পাঁচ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক একীভূত করে একটি নতুন ইসলামী ব্যাংক গঠন করা হবে।
এ জন্য পাঁচ ব্যাংকের বোর্ড বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলো এখন থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে।
গভর্নর বলেন, “এই ব্যাংকগুলোর শেয়ারমূল্য শূন্য হিসেবে বিবেচিত হবে, কারণ তাদের নিট সম্পদের মূল্য ঋণাত্মক। আমরা কাউকে ক্ষতিপূরণ দিচ্ছি না, তবে জরিমানাও করছি না।”
‘দুর্বল ব্যাংক নয়, বিনিয়োগকারীদের সর্বনাশ’
বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের নেতারা বলছেন, এভাবে শেয়ারমূল্য শূন্য ঘোষণা মানে হাজার হাজার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর মূলধন ধ্বংস করা।
তারা প্রশ্ন তোলেন, “একতরফাভাবে ব্যাংক মার্জার এবং শেয়ার বাতিল ঘোষণা কোথা থেকে গভর্নরকে এই ক্ষমতা দিয়েছে?”
সংগঠনটির আহ্বায়ক জানান, “এই সিদ্ধান্ত দেশের পুঁজিবাজার, ব্যাংক খাত এবং জনগণের আমানত—সবকিছুই অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। গভর্নর যদি পদত্যাগ না করেন, তাহলে ঢাকা শহর বিনিয়োগকারীদের আন্দোলনে অচল হয়ে যাবে।”
‘গ্রাহকদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই’ — গভর্নর
সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন,“পাঁচ ব্যাংকের মোট ৭৫০টি শাখা ও ৭৫ লাখ গ্রাহক রয়েছে। তাদের আমানত পুরোপুরি নিরাপদ। ২ লাখ টাকা পর্যন্ত আমানতকারীরা ১০০ শতাংশ টাকা তুলতে পারবেন।”
তিনি আরও বলেন, নতুন ব্যাংকের পেইড-আপ ক্যাপিটাল হবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড়।
গভর্নর দাবি করেন, “এই সিদ্ধান্ত দেশের ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতা ও জনগণের স্বার্থ রক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে।”
এমবি/এসআর
