রাঙ্গাবালী শ্রমিক দল: পদ না পেয়ে সুদসহ টাকা ফেরত দাবি

মেঘনাবার্তা প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় বিএনপির সহযোগী সংগঠন শ্রমিক দলের কমিটি গঠনকে ঘিরে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক বদিরুজ্জামান জুয়েলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ অনুযায়ী, ইউনিয়ন পর্যায়ের বিভিন্ন পদ দেওয়ার আশ্বাসে একাধিক নেতা-কর্মীর কাছ থেকে টাকা নেওয়া হলেও ঘোষিত কমিটিতে তাঁদের স্থান দেওয়া হয়নি। পরে ক্ষুব্ধ কর্মীরা সুদসহ টাকা ফেরত দাবি করেন।

সম্প্রতি টাকা ফেরত চাওয়ার একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে বদিরুজ্জামান ও পদবঞ্চিত এক কর্মীর কথোপকথন শোনা যায়। কথোপকথনে বদিরুজ্জামানকে বলতে শোনা যায়,
“আমি তো পারি নাই, এখন কী করব, আপনার জিনিস (টাকা) রাইখা লাভ আছে?”
এর জবাবে শ্রমিক দলের কর্মী আমিনুল ইসলাম বলেন, “আমার টাকা দুই বছর কেন রাখছেন? আপনি এখন কত টাকা ফেরত দিছেন?”
বদিরুজ্জামান জবাব দেন, “আমি ১০ হাজার টাকা দিছি।”
অমনি আমিনুল বলেন, “চালিতাবুনিয়া থেকে যে টাকা দিছি, সে টাকাও সুদাসলে ফেরত দিতে হবে।”

স্থানীয় সূত্র জানায়, বদিরুজ্জামান ইউনিয়ন পর্যায়ের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদ দেওয়ার আশ্বাসে অন্তত কয়েকজন কর্মীর কাছ থেকে দশ-লক্ষাধিক টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

শ্রমিক দলের কর্মী আমিনুল ইসলাম বলেন, “ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি বানানোর কথা বলে আমার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন জুয়েল। চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক বানানোর আশ্বাসে আরও ৪০ হাজার টাকা নিয়েছেন।”

একই অভিযোগ করেন যুবদল কর্মী মাসুদ হাওলাদার। তিনি বলেন, “ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক করার কথা বলে আমার কাছ থেকে ৪৭ হাজার টাকা নিয়েছেন, কিন্তু আমাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে পদ দেওয়া হয়েছে।”

এ ছাড়া যুবদল কর্মী সাকিল মাহামুদ দাবি করেন, “যুগ্ম আহ্বায়ক বানানোর কথা বলে বদিরুজ্জামান আমার কাছ থেকে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা নিয়েছেন। এছাড়া কর্মসূচির নামে আরও দুই লাখ টাকা নিয়েছেন।”

অভিযোগকারীরা জানান, নতুন কমিটি ঘোষণার পর তাঁরা বদিরুজ্জামানকে ফোন দিলে তিনি অপারগতার কথা জানান। পরে স্থানীয় নেতাদের মধ্যস্থতায় বৈঠকে বসলে তিনি টাকা নেওয়ার বিষয় স্বীকার করে ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন।

এ বিষয়ে উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক বদিরুজ্জামান জুয়েল বলেন,
“জেলায় অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য লঞ্চ ভাড়া বাবদ তাঁদের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিলাম। এখন বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে আমাকে হেয় করার চেষ্টা চলছে।”

এমবি এইচআর