৫ বছরে সর্বনিম্ন পাস, অর্ধেকে নেমেছে জিপিএ-৫

মেঘনাবার্তা শিক্ষা ডেস্ক: ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে নিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। এবার গড় পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১৯ শতাংশ কম। ২০২৪ সালে পাসের হার ছিল ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

আরও বড় ধাক্কা এসেছে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে। গত বছর ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেলেও, এবার সে সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৬৯ হাজার ৯৭ জনে—অর্থাৎ অর্ধেকেরও নিচে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের ফল একযোগে প্রকাশ করেন বাংলাদেশ আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবির।

তিনি বলেন, “এবারের ফলাফল কিছুটা হতাশাজনক হলেও এটি পরীক্ষার মান যাচাইয়ে বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছে। ভবিষ্যতে এই ফল শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে সহায়ক হবে।”

বোর্ডভিত্তিক ফলাফল এক নজরে

• ঢাকা বোর্ড: ৬৪.৬২% পাস

• রাজশাহী বোর্ড: ৫৯.৪০%

• চট্টগ্রাম বোর্ড: ৫২.৫৭%

• দিনাজপুর বোর্ড: ৫৭.৪৯%

• ময়মনসিংহ বোর্ড: ৫১.৫৪%

• কুমিল্লা বোর্ড: ৪৮.৮৬% (জিপিএ-৫: ২,৭০৭ জন)

• যশোর বোর্ড: ৫০.২০% (জিপিএ-৫: ৫,৯৯৫ জন)

• বরিশাল বোর্ড: ৬২.৫৭% (জিপিএ-৫: ১,৬৭৪ জন)

• সিলেট বোর্ড: ৫১.৮৬% (জিপিএ-৫: ১,৬০২ জন)

• মাদরাসা বোর্ড: ৭৫.৬১%

• কারিগরি বোর্ড: ৬২.৬৭%

হতাশার পাশাপাশি কিছু আলোকরেখা

দেশের ৩৪৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থী পাস করেছে, তবে ২০২টি প্রতিষ্ঠানের একজনও পাস করতে পারেনি।

শিক্ষাবিদদের অনেকে এই ফলাফলকে শিক্ষার্থীদের “মৌলিক দক্ষতার ঘাটতি”র প্রতিফলন বলে মনে করছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, “অটোপাসের প্রভাব, অনলাইন ক্লাসের দুর্বলতা এবং পুনরায় কঠোর মূল্যায়ন প্রক্রিয়া শিক্ষার্থীদের প্রকৃত যোগ্যতা যাচাইয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে।”

২০২০ সালে করোনা পরিস্থিতিতে সবাইকে অটোপাস দেওয়া হয়েছিল। এরপর ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে পাসের হার ছিল ৯৫ থেকে ৭৭ শতাংশের মধ্যে। এবার সেই হার নেমে এসেছে ৫৮ শতাংশে—যা শিক্ষা খাতের জন্য একটি বড় সতর্কবার্তা।

এমবি/এসআর