বদলায়নি ঢাকার বাস খাতের নিয়ন্ত্রণচিত্র; এনায়েত চক্রের হাতেই জিম্মি ঢাকার বাস খাত
মেঘনাবার্তা প্রতিনিধি: আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও ঢাকার সড়ক পরিবহন খাতে আগের প্রভাবশালী চক্রের নিয়ন্ত্রণ অটুট রয়েছে। বিশেষ করে নিষিদ্ধ আওয়ামী রাজনীতির নেতাকর্মীদের আত্মীয়স্বজন ও ঘনিষ্ঠরা রাজধানীর প্রায় অর্ধশতাধিক বাস কম্পানির মালিকানা ও পরিচালনায় রয়েছেন। এসব কোম্পানির অনেকগুলোর ওপর এখনো প্রভাব বিস্তার করছে পলাতক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ চক্র।
সূত্র জানায়, সরকার পরিবর্তনের পরও এনা পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বসুমতি ট্রান্সপোর্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান পদে বহাল আছেন খন্দকার এনায়েত উল্লাহ। তাঁর ৪০টি ব্যাংক হিসাবে ১২৫ কোটি টাকার বেশি জমার তথ্য পাওয়া গেছে। নিজের ও পরিবারের নামে রয়েছে ২৩৫টি বাসের মালিকানা। দুদক সূত্রে জানা গেছে, এই সম্পদ গোপনে বিক্রিরও চেষ্টা করছেন তিনি।
প্রতিদিন রাজধানীর সড়কে গড়ে এক কোটি ৬৫ লাখ টাকার চাঁদা তোলার অভিযোগ রয়েছে এনায়েত উল্লাহ চক্রের বিরুদ্ধে। তিনি বর্তমানে দুবাইয়ে অবস্থান করছেন, তবে তাঁর সহযোগীরা কৌশলে বড় বড় রুটের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছেন।
রাজধানীর প্রজাপতি, বসুমতি, বিহঙ্গ, রবরব, পরিস্থান, স্বাধীন, ঠিকানা, ইতিহাস, রইছ, ওয়েলকামসহ অর্ধশতাধিক পরিবহন কোম্পানির বিভিন্ন পদে এখনো আছেন আওয়ামী রাজনীতির ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা। অনেকেই সাবেক এমপি, থানা আওয়ামী লীগ বা সহযোগী সংগঠনের প্রভাবশালী নেতা ছিলেন।
পরিবহন মালিক সমিতির কর্মকর্তারা জানান, পুরনো চক্র ভেঙে নতুন কমিটি গঠন সম্ভব হয়নি বলে ঢাকার বাস খাতে আগের প্রভাবই বহাল রয়েছে। বিশেষ করে গাবতলী, মহাখালী, সায়েদাবাদ, মিরপুর ও যাত্রাবাড়ীর বাস রুটগুলোয় এখনো পুরনো নেটওয়ার্কের দাপট চলছে।
দুবাই থেকে নিয়ন্ত্রণকারী এনায়েত উল্লাহর ঘনিষ্ঠ আবুল মুনসুর বুলবুল, খোকন আহমেদ, হুমায়ুন কবির তপন ও দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ মাঠপর্যায়ে সক্রিয়। এর মধ্যে দেলোয়ার হোসেন গাবতলী টার্মিনালের অধিকাংশ কোম্পানির ওপর প্রভাব বিস্তার করেছেন।
পরিবহন খাতের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকার পরিবর্তন হলেও রাজনীতির ছায়ায় গড়ে ওঠা এই ব্যবসায়িক গোষ্ঠীগুলোই এখনো রাজধানীর বাস খাতের মূল নিয়ন্ত্রক। ফলে ঢাকার গণপরিবহন খাতে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আসেনি, বরং আগের চক্রের প্রভাবই চলছে নতুন মোড়কে।
এমবি/এসআর
