ধর্মের নামে রাজনীতি করা একটি দলের হাতে নির্যাতিত হচ্ছেন নারীরা: সালাহউদ্দিন

মেঘনাবার্তা প্রতিনিধিঃ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশে ধর্মের নামে রাজনীতি করা একটি দলের প্রয়োজনে নারীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। রাজধানীর শাহবাগে ‘নারীর ওপর ক্রমবর্ধমান সহিংসতা ও অসম্মান’— শীর্ষক মৌন মিছিলের আগে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশ শেষে নারীরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে শাহবাগ থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত মৌন মিছিল করেন।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান। পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন আরও শিরীন সুলতানা, নিলোফার চৌধুরী মনি, সানজিদা ইসলাম তুলি, রেহানা আক্তার শিরীনসহ অনেকে।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশে নারী নির্যাতনের বহু ঘটনা ঘটলেও এখনো কার্যকর সামাজিক ও আইনি প্রতিবাদ গড়ে ওঠেনি। অনেক ক্ষেত্রে কঠোর আইন থাকা সত্ত্বেও তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন না হওয়ায় অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকেও আইনের অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি অভিযোগ করেন, একটি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক গোষ্ঠী নারীদের কর্মঘণ্টা কমানোর কথা বলে তাদের কর্মসংস্থান সীমিত করতে চায়। এতে নারীরা কর্মক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়বে এবং দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর অগ্রগতি ব্যাহত হবে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আপনারা কি চান নারীর কর্মসংস্থান কমে যাক?” — উপস্থিত নারীরা একসঙ্গে ‘না’ বলে জবাব দেন।

তিনি আরও বলেন, দেশের অগ্রগতি নিশ্চিত করতে নারী-পুরুষ উভয়ের সমান সুযোগ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও বাসস্থানে নারীরা যাতে নিরাপদ থাকে, সেই লক্ষ্যে বিএনপির ৩১ দফার ভিত্তিতে নারীবিষয়ক পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।

রাজশাহীর কাটাখালীতে ধানের শীষের প্রচারে গিয়ে দুই নারী নেত্রী নির্যাতিত হওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, “জুতা পেটা করেছে একটি ধর্মীয় গোষ্ঠী, যারা ধর্মের নামে রাজনীতি করে।” তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরকেও অন্যায় বলে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এমন সমাজ গড়ে তুলতে হবে যেখানে ধর্ম, বর্ণ, ভাষা বা সম্প্রদায়ের ভিত্তিতে কোনো বৈষম্য থাকবে না। সংবিধান অনুযায়ী সবাই সমান অধিকার ভোগ করবে। সেই লক্ষ্যেই দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের আন্দোলন হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এমবি এইচআর