মেঘনাবার্তা প্রতিবেদক:
২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ অনিশ্চিত থাকায় নৌকা ভোটব্যাংক দখলের জন্য বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি জাতীয় দলের তৎপরতা বাড়াচ্ছে। বিশেষ করে গোপালগঞ্জে নৌকার প্রভাবশালী ভোটারদের সমর্থন আদায়ে বিভিন্ন দল মাঠ পর্যায়ে সক্রিয় হয়েছে।
গোপালগঞ্জে পরিস্থিতি:
গোপালগঞ্জকে আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে দেখা হয়। জাতীয় নির্বাচনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখানে তিনটি আসনেই নৌকা প্রতীক বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়। জামায়াত এবার তিন আসনে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে। গোপালগঞ্জ-২ সদর আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী আজমল হোসেন সরদার জানিয়েছেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সঙ্গে পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে ভোট আদায় করবেন। তিনি বলেন, “নৌকা সমর্থকরা যদি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন, তবে তারা আমাদের ভোট দেবেন।”
জামায়াতের পক্ষ থেকে নৌকা সমর্থকদের নিরাপত্তা ও মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। সরদার উল্লেখ করেছেন, গত কয়েক মাসে বিভিন্ন ঘটনায় ২০–২৫টি মামলা হয়েছে, যেগুলোর মোকাবিলায় তারা ভোটারদের সহায়তা করছে।
বিএনপির অবস্থান:
গোপালগঞ্জে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী কে এম বাবর বলেন, “এবার নৌকা প্রতীক নির্বাচনে থাকবে না। ফলে সাধারণ মানুষ ধানের শীষে ভোট দিতে পারে।” তিনি ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, ভবিষ্যতে প্রতিশোধের রাজনীতি করা হবে না। তিনি জামায়াতের অভিযোগকে ‘গুপ্ত সংগঠনের কাজ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এনসিপির মূল্যায়ন:
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব জানিয়েছেন, নৌকার ভোটব্যাংক বর্তমানে কমে এসেছে এবং ভোটারদের সমর্থন প্রার্থীদের কার্যক্রম ও এলাকার উপর নির্ভর করবে। তিনি মনে করেন, ছাত্র ও তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বড় পরিবর্তন ঘটেছে যা ভোটে প্রভাব ফেলতে পারে।
জামায়াত ও বিএনপির প্রস্তুতি:
জামায়তে ইসলামী নৌকা ভোটারদের নিজেদের পক্ষে আনার জন্য সক্রিয়। সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “ভোটাররা দেখবে কোন দলের ইশতেহার কার্যকর, চরিত্র সৎ এবং নিরাপদ।” তিনি হিন্দু ভোটারদের জন্যও স্থানীয় সমাবেশ করেছেন।
বিএনপি আত্মবিশ্বাসী ও বলছে, ভোটব্যাংক কোনো বিশেষ গোষ্ঠীর নয়, তারা সমগ্র জনগণের জন্য রাজনীতি করে। স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “আমরা রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে চাই।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, নৌকা ভোটাররা শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ ও হাইকমান্ডের নির্দেশের ওপর নির্ভর করবেন।
এমবি/এসআর
