৪১ বছরের স্বপ্ন পূরণ করছে ভারত–পাকিস্তান
এশিয়া কাপ ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফাইনালে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান।

নিজস্ব প্রতিনিধি: চিত্রনাট্যটা প্রতিবারই সাজিয়ে রাখা হয় এভাবে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আর চিত্রনাট্য অনুযায়ী সব ঠিক থাকে না। আক্ষরিক অর্থেই সিনেমা নয় বলে পরিচালক চাইলেই ‘কাট’ বলে আবার নতুন করে দৃশ্যধারণ শুরু করতে পারেন না। শেষ পর্যন্ত তাই এশিয়া কাপের ফাইনালেও আর মুখোমুখি হয় না ভারত–পাকিস্তান।
১৯৮৪ সালে শুরু হওয়া এশিয়া কাপের বয়স এখন ৪১ বছর। হ্যাঁ, এতগুলো বছরের চেষ্টাই সফল হয়েছে এবার। ওয়ানডে আর টি–টোয়েন্টি সংস্করণ মিলিয়ে টুর্নামেন্টের ১৭তম আসরে এসে অবশেষে ভারত–পাকিস্তান মুখোমুখি হচ্ছে এশিয়া কাপের ফাইনালে। দুবাইয়ে সেই ফাইনাল হবে আগামীকাল।
ফাইনালে ভারত–পাকিস্তানকে মুখোমুখি করিয়ে দিচ্ছে আসলে বাংলাদেশ। গত পরশুর বাংলাদেশ–পাকিস্তান ম্যাচটা দেখে থাকলে তা নিয়ে আর নতুন করে কিছু বলার নেই। না দেখলে হাইলাইটস দেখাটাই সমাধান।
১১ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৫৫ রান করা পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ যেভাবে অলিখিত সেমিফাইনালটা হেরে গেল, ‘ভারত–পাকিস্তান ফাইনালে’র পথ তৈরি করে দেওয়া ছাড়া সেটির আর কীই–বা ব্যাখ্যা দেওয়া যায়!
ম্যাচ যেকোনো দল হারতেই পারে। কিন্তু খেলার ধরন, ব্যাটিংয়ে তাড়াহুড়া, ম্যাচ পরিস্থিতি বিবেচনার বোধ হারিয়ে ফেলা—এসবের ব্যাখ্যা পাওয়া সত্যিই কঠিন।
তা না পাওয়ায় সবচেয়ে খুশি সম্ভবত এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি)। ভারত–পাকিস্তান ফাইনাল হচ্ছে বলে লাভের অঙ্কের হিসাবটা এখন তারা আরেকটু বাড়িয়ে করতে পারবে। ভারত–পাকিস্তান মানেই বিজ্ঞাপন আর ব্রডকাস্টারদের বাড়তি আগ্রহ; আর তাদের আগ্রহ মানে আরও বেশি টাকা।
পাকিস্তান দলটাই যে এমন! ‘ওয়ান মিনিট ডাউন, নেক্সট মিনিট আপ’ কথাটাও দারুণভাবে খেটে যায় তাদের সঙ্গে। সহজ বাংলায় বললে, পাকিস্তানের ক্রিকেট এই পাতালে, একটু পরই আবার আকাশে এবং উল্টোটাও।
আফ্রিদির মধ্যে দেখিয়ে দেওয়ার ভাবনাটা এসেছে পাকিস্তানকে সুপার ফোরে হারিয়ে দেওয়ার পর ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের এক মন্তব্যের কারণে। শেষ মুহূর্তে একরকম নিজে যেচে সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি বলেছিলেন, ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ এখন আর দ্বৈরথ নেই। যুক্তি হিসেবে দুই দলের শেষ কিছু ম্যাচের পরিসংখ্যানও তিনি সামনে এনেছেন।
দুই প্রতিবেশী দেশের রাজনৈতিক উত্তাপ এখন রূপ নিয়েছে খেলার মাঠে হাত না মেলানো আর মুখ দেখাদেখি বন্ধ হওয়াতে। একই মাঠে খেলতে নেমেও দুই দিকে মুখ করে থাকা দুটি দলের ফাইনালের জন্য যে এত আকাঙ্ক্ষা, তা তো তারা ভারত–পাকিস্তান বলেই!
সেই ভারত ও পাকিস্তান এবার পূরণ করছে এশিয়া কাপের ৪১ বছরের স্বপ্ন।
এমবি/টিআই