টোল আদায়ে অনিয়ম, শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ে অনিয়ম ও সরকারি অর্থের অপব্যবহারের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছয়জন সাবেক মন্ত্রী এবং সরকারি কর্মকর্তাসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

Oct 12, 2025 - 20:20
 0  3
টোল আদায়ে অনিয়ম, শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
ছবি-সংগৃহিত

মেঘনাবার্তা প্রতিনিধিঃ

মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ে অনিয়ম ও সরকারি অর্থের অপব্যবহারের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছয়জন সাবেক মন্ত্রী এবং সরকারি কর্মকর্তাসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযোগে বলা হয়েছে, একক উৎসভিত্তিক দরপত্রের মাধ্যমে টোল আদায়ের দায়িত্ব দিয়ে সরকারের শতকোটি টাকার ক্ষতি সাধন করা হয়েছে।

রোববার (১২ অক্টোবর) দুদকের জনসংযোগ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

দুদকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম লিমিটেড (সিএনএস)-কে একক উৎসভিত্তিক দরপত্রের মাধ্যমে মেঘনা-গোমতী সেতুর টোল আদায়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর আগে বৈধ টেন্ডার বাতিল করে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই এই চুক্তি সম্পাদন করা হয়।

সিএনএসকে টাকার নির্দিষ্ট অঙ্কে নয় বরং মোট আদায়কৃত টোলের ১৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জে (ভ্যাট ও আইটি ব্যতীত) কাজের আদেশ দেওয়া হয়। এর ফলে প্রতিষ্ঠানটি ৪৮৯ কোটি টাকার বেশি বিল গ্রহণ করে। অথচ ২০১০-২০১৫ মেয়াদে একই সেতুতে এমবিইএল-এটিটি যৌথভাবে টোল আদায়ের দায়িত্বে ছিল, যার মোট ব্যয় হয়েছিল মাত্র ১৫ কোটি টাকার কিছু বেশি।

দুদকের অভিযোগে আরও বলা হয়, ২০২২-২৫ মেয়াদে ইউডিসি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড একই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে তিন বছরের জন্য ৬৭ কোটি টাকায় চুক্তি পায়। পাঁচ বছরে সেই অঙ্ক দাঁড়ায় প্রায় ১১২ কোটি টাকা। তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সিএনএসকে একক উৎসভিত্তিক চুক্তি দেওয়ায় সরকারের প্রায় ৩০৯ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন—সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ওবায়দুল কাদের, আনিসুল হক, প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, সচিব এম এ এন ছিদ্দিক, অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক জলিল, উপ-সচিব মোহাম্মদ শফিকুল করিম, প্রকৌশলী মো. ফিরোজ ইকবাল, ইবনে আলম হাসান, মো. আফতাব হোসেন খান, মো. আব্দুস সালাম, এবং সিএনএস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনীর উজ জামান চৌধুরী, পরিচালক সেলিনা চৌধুরী ও ইকরাম ইকবাল।

দুদকের অভিযোগে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজশে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজেদের বা অন্যকে লাভবান করার উদ্দেশ্যে প্রতারণা ও আত্মসাৎমূলক কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০ ও ১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা অনুযায়ী মামলা অনুমোদন করা হয়েছে।

এমবি এইচআর